আরোহণ ও অবরোহণ পদ্ধতি আলোচনা করো

আরোহণ ও অবরোহণ পদ্ধতি আলোচনা করো – ভূপৃষ্ঠের কোনো নীচু স্থান উঁচু ভূমিতে পরিণত হলে  তাকে আরোহন বলে ।অপরদিকে ভূপৃষ্ঠের কোনো উঁচু স্থান নীচু ভূমিতে পরিণত হলে  তাকে অবরোহন বলে ।

আরোহণ ও অবরোহণ পদ্ধতি আলোচনা করো :

আরোহণ ও অবরোহণ পদ্ধতি আলোচনা করো

আরোহণ কাকে বলে :

ভূপৃষ্ঠের কোনো নীচু স্থান প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা সঞ্চয়প্রাপ্ত হয়ে উঁচু ভূমিতে পরিণত হলে  তাকে আরোহন প্রক্রিয়া বলে ।

সৃষ্টির কারণ :

মূলত নদীর আরোহণ ঘটে নদীর মৃদু ঢালযুক্ত অংশে ।এই অংশে ঢাল খুব কম হওয়ায় নদীবাহিত পলি খুব দ্রুত নদীগর্ভে থিতিয়ে পড়ে।

এবং দ্রুত পলি সঞ্চিত হতে শুরু করে। এই নদীবাহিত পলি স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে চর-এর সৃষ্টি হয়।

তখন নদী অনেকগুলি শাখায় বিভক্ত হয়ে বইতে শুরু করলে নদীর বহনক্ষমতা কমে গিয়ে মূলত সঞ্চয় ক্রিয়া ঘটতে থাকে।

বৈশিষ্ট্য :

(ক) আরোহন প্রক্রিয়ায় ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পায় ।

(খ) এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় । যেমন – গাঙ্গেয় বদ্বীপ ।

(গ) এটি একটি ইতিবাচক প্রক্রিয়া ।

(ঘ) এই প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রকগুলি হল – ভূমির ঢাল ,পলির পরিমান ইত্যাদি ।

(ঙ) আবহবিকার, নদী ,বায়ু, হিমবাহ ,ভৌমজল,সমুদ্রতরঙ্গের মাধ্যমে আরোহন  প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন হয় ।

প্রভাব :

এই প্রক্রিয়ায় ভূমির ঢাল হ্রাস পায় এবং বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ গড়ে ওঠে যেমন – দ্বীপ, পলল শঙ্কু, স্বাভাবিক বাঁধ, প্লাবনভূমি ইত্যাদি ।

অবরোহণ কাকে বলে :

ভূপৃষ্ঠের কোনো উঁচু স্থান প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নীচু ভূমিতে পরিণত হলে  তাকে অবরোহন প্রক্রিয়া বলে ।

সৃষ্টির কারণ :

ভূপৃষ্ঠের কোনো উঁচু স্থান প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা অর্থাৎ নদীর শক্তি ,আবহবিকার প্রভৃতির দ্বারা কালক্রমে ক্ষয় পেতে পেতে মূলত নিচু ভূমিতে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে অবরোহন প্রক্রিয়া ক্রিয়াশীল হয় ।

বৈশিষ্ট্য :

(ক) অবরোহন প্রক্রিয়ায় ভূমির উচ্চতা হ্রাস পায় ।

(খ) এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ক্ষয়জাত ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় যেমন – আরাবল্লী একটি ক্ষয়জাত পর্বত ।

(গ) এই প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রকগুলি হল – আবহবিকারের তীব্রতা ,শিলার প্রকৃতি ,গঠন ইত্যাদি ।

(ঘ) আবহবিকার, নদী ,বায়ু ,হিমবাহ ,সমুদ্রতরঙ্গের মাধ্যমে অবরোহন  প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন হয়

(ঙ) এটি একটি নেতিবাচক প্রক্রিয়া ।

প্রভাব :

মূলত ভূমির উত্তল ও অবতল ঢাল তৈরি হয় এবং ঢালের পশ্চাৎ অপসারণ ঘটে ।

বিভিন্ন প্রকার ক্ষয়জাত ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।

ভূপৃষ্ঠের উঁচুনীচু অবস্থা ক্রমশ মসৃণতা লাভ করে।

অবরোহন ও আরোহনের পার্থক্য :

বিষয় অবরোহন আরোহন
সংজ্ঞা ভূপৃষ্ঠের কোনো উঁচু স্থান প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নীচু ভূমিতে পরিণত হলে  তাকে অবরোহন প্রক্রিয়া বলে ।ভূপৃষ্ঠের কোনো নীচু স্থান প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা সঞ্চয়প্রাপ্ত হয়ে উঁচু ভূমিতে পরিণত হলে  তাকে আরোহন প্রক্রিয়া বলে ।
শব্দার্থ অবরোহন শব্দটির অর্থ – উচ্চতা হ্রাস পাওয়া ।আরোহন শব্দটির অর্থ – উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া ।
ভূমির উচ্চতা অবরোহন প্রক্রিয়ায় ভূমির উচ্চতা হ্রাস পায় ।আরোহন প্রক্রিয়ায় ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পায় ।
প্রক্রিয়া  এটি একটি নেতিবাচক প্রক্রিয়া ।আর এটি একটি ইতিবাচক প্রক্রিয়া ।
ভূমিরূপ এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ক্ষয়জাত ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় যেমন আরাবল্লী একটি ক্ষয়জাত পর্বত ।এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় যেমন গাঙ্গেয় বদ্বীপ ।
নিয়ন্ত্রক বা প্রভাবক এই প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রকগুলি হল – আবহবিকারের তীব্রতা ,শিলার প্রকৃতি ,গঠন ইত্যাদি ।এই প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রকগুলি হল – ভূমির ঢাল ,পালির পরিমান ইত্যাদি ।
মাধ্যম আবহবিকার, নদী ,বায়ু ,হিমবাহ ,সমুদ্রতরঙ্গের মাধ্যমে অবরোহন  প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন হয় আবহবিকার, নদী ,বায়ু, হিমবাহ ,ভৌমজল,সমুদ্রতরঙ্গের মাধ্যমে আরোহন  প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন হয় ।
আরো পড়ুন – ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও রাজধানীর নাম

FAQs On – আরোহণ ও অবরোহণ পদ্ধতি আলোচনা করো

অবরোহন কাকে বলে ?

ভূপৃষ্ঠের কোনো উঁচু স্থান প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নীচু ভূমিতে পরিণত হলে  তাকে অবরোহন প্রক্রিয়া বলে ।

আরোহন কাকে বলে ?

ভূপৃষ্ঠের কোনো নীচু স্থান প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা সঞ্চয়প্রাপ্ত হয়ে উঁচু ভূমিতে পরিণত হলে  তাকে আরোহন প্রক্রিয়া বলে ।

অবরোহন শব্দটির অর্থ কি ?

অবরোহন শব্দটির অর্থ – উচ্চতা হ্রাস পাওয়া ।

আরোহন শব্দটির অর্থ কি ?

আরোহন শব্দটির অর্থ – উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া ।

“আরোহণ ও অবরোহণ পদ্ধতি আলোচনা করো”-এ 2-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন