বিনয় বাদল দীনেশ স্মরণীয় কেন – বি-বা-দি বাগ নামে পরিচিত বিনয় বসু ,বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত এই তিনজন রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান করেন যা ইতিহাসে অলিন্দ যুদ্ধ নামে পরিচিত ।
এই পৃষ্ঠায়
বিনয় বাদল দীনেশ স্মরণীয় কেন :
আরো পড়ুন – প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার স্মরণীয় কেন
বিনয় বাদল দীনেশ স্মরণীয় কারণ :
ভূমিকা :
বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনের সময়ে বি-বা-দি বাগ নামে পরিচিত বিনয় বসু ,বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত এই তিনজন কলকাতার মহাকরণ বা রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান করেন যা ইতিহাসে অলিন্দ যুদ্ধ নামে পরিচিত । বিনয় বাদল দীনেশের এই রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান তাদেরকে ইতিহাসে স্মরণীয় করে রেখেছে ।
বিনয় বসুর পরিচয় :
মিডফোর্ড মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন বিনয় বসু । ছাত্রাবস্থায় তিনি বিপ্লবী নেতা হেমচন্দ্র ঘোষের সংস্পর্শে আসেন ।
এবং বিপ্লবী পরিকল্পনা অনুসারে অত্যাচারী ইন্সপেক্টর লোম্যানকে গুলি করে হত্যা করেন ।এরপর তিনি ছদ্মবেশে ঢাকা থেকে কলকাতায় পালিয়ে যান ।
বাদল গুপ্তের পরিচয় :
বাদল গুপ্তের আসল নাম সুধীর গুপ্ত ।ছাত্রাবস্থায় তিনি শিক্ষক নিকুঞ্জ সেনের সংস্পর্শে আসেন এবং বিপ্লবী আদর্শে দীক্ষিত হন ।
তিনি পরবর্তীকালে বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স দলের লেফটেন্যান্ট পদপ্রাপ্ত হয়েছিলেন ।
দীনেশ গুপ্তের পরিচয় :
দীনেশ গুপ্ত বিক্রমপুর এলাকায় যশলং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ।তার ডাকনাম ছিল নসু ।ছোটো থেকেই তিনি ছিলেন নির্ভিক ও সুবক্তা ।
ছাত্রাবস্থায় তিনি বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স দলের সঙ্গে যুক্ত হন এবং পরবর্তীতে তিনি মেদিনীপুরে চলে আসেন ।
রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান :
বিনয়,বাদল,দীনেশ ১৯৩০ খ্রি: ৮ই ডিসেম্বর দুপুর ১২ টায় কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণ করেন । বিপ্লবীরা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কারা বিভাগের প্রধান জেনারেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন ।
বিচার বিভাগের সচিব নেলসন গুলিবিদ্ধ হন এবং চিফ সেক্রেটারি টাউন্টসেন্ট-সহ অনেকে আহত হন ।
অলিন্দ যুদ্ধ :
পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্টের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী বিপ্লবীদের উপর পাল্টা আক্রমণ চালায় । তিন বিপ্লবীর সঙ্গে বিশাল ইংরেজ বাহিনীর রাইটার্স বিল্ডিংয়ের বারান্দায় বা অলিন্দে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় বলে এই যুদ্ধ অলিন্দ যুদ্ধ নামে পরিচিত ।
বিনয় ও বাদলের মৃত্যু :
অলিন্দ যুদ্ধকালে পুলিশ এই তিনজন বিপ্লবীকে ঘিরে ফেললে পালানাে অসম্ভব দেখে বাদল পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন এবং বিনয় ও দীনেশ পিস্তল দিয়ে নিজেদের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কয়েকদিন পর বিনয় হাসপাতালে মারা যান।
দীনেশের ফাঁসি :
চিকিৎসকদের চেষ্টায় দীনেশ বেঁচে যান এবং আলিপুর জর্জ কোর্টের ইংরেজ বিচারক গার্লিক-এর আদেশে তার ফাঁসি হয় ।
মূল্যায়ন :
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিনয়-বাদল-দীনেশ স্মরণীয় হয়ে আছেন ।বিনয়-বাদল-দীনেশের এই আত্মবলিদান দেশের যুবশক্তিকে মাতৃভূমির স্বাধীনতা যজ্ঞে আত্মোৎসর্গের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল ।এই তিন বিপ্লবীকে স্মরণীয় করে রাখতে কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম বদলে বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ ( বি-বা-দি বাগ )রাখা হয়েছে ।
আরো পড়ুন – লীলা নাগ স্মরণীয় কেন
FAQs On – বিনয় বাদল দীনেশ স্মরণীয় কেন
বিনয় বাদল দীনেশ কি জন্য বিখ্যাত ?
১৯৩০ সালের ৮ই ডিসেম্বর দীনেশ গুপ্ত, বিনয় বসু ও বাদল গুপ্ত এই তিন বাঙ্গালী বিপ্লবী কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং-এ প্রবেশ করে কর্নেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন। তারপর রাইটার্স বিল্ডিংয়ের বারান্দা বা অলিন্দে ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে এই তিন বিপ্লবীর সংঘর্ষ বাধে।
বিনয় বাদল দীনেশ রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণ করেছিল ১৯৩০ খ্রি: ৮ই ডিসেম্বর দুপুর ১২ টায় ।
রাইটার্স বিল্ডিং এর বর্তমান নাম কি?
রাইটার্স বিল্ডিং এর বর্তমান নাম মহাকরণ ।
বিনয় বাদল দীনেশ এর পুরো নাম যথাক্রমে- বিনয় বসু , বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত ।