বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ নীতি কি – প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী অটোভন বিসমার্ক প্রাশিয়ার আইনসভায় ঘোষণা করেছিলেন , গুরুত্বপূর্ণ কাজ বক্তৃতা বা ভোটের দ্বারা নয় ,তা সম্ভব হবে রক্ত ও লৌহ নীতির দ্বারা অর্থাৎ যুদ্ধ ও কঠোর শৃঙ্খলা বোধের দ্বারা ।
এই পৃষ্ঠায়
বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ নীতি কি :
আরো পড়ুন – এমস টেলিগ্রাম কি
বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ নীতি :
ভূমিকা :
অটো লিওপোল্ড ভন বিসমার্ক ইতিহাসে বিসমার্ক নামে অধিক পরিচিত । তিনি ছিলেন সমকালীন ইউরোপীয় রাজনীতির ভাগ্যনিয়ন্তা ।
তিনি প্রাশিয়ার আইনসভায় ঘোষণা করেছিলেন , গুরুত্বপূর্ণ কাজ বক্তৃতা বা ভোটের দ্বারা নয় ,তা সম্ভব হবে রক্ত ও লৌহ নীতির দ্বারা অর্থাৎ যুদ্ধ ও কঠোর শৃঙ্খলা বোধের দ্বারা ।
তিনি এই রক্ত ও লৌহ নীতির দ্বারা জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ ও সংঘটিত রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন ।
বিসমার্কের পূর্ব পরিচয় :
বিসমার্ক ১৮১৫ খ্রি: বান্ডেনবার্গের অন্তর্গত শোনহাউজেন অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন ।বিসমার্ক ছিলেন জুঙ্কার বা জমিদার পরিবারের সন্তান ।তিনি বার্লিন ও গাটিংজেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ।
বিসমার্কের উত্থান :
প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিক উইলিয়ামের মৃত্যুর পর তাঁর ভাই প্রথম উইলিয়াম প্রাশিয়ার রাজা হওয়ার পর ১৮৬২ খ্রি: বাস্তববাদী ও রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ বিসমার্ককে তাঁর প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন ।
বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ নীতি :
বিসমার্কের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাজতন্ত্রের অভ্যন্তরে জার্মানির সমস্ত রাজ্যগুলিকে উদ্ধার করে একটি ঐক্যবদ্ধ জার্মান রাষ্ট্র গঠন করা ।
এবং তিনি এই কাজটি করার জন্য যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিলেন।
তিনি জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য রক্ত ও লৌহ নীতি অনুসরণ করেছিলেন ।
তিনি প্রাশিয়ার আইনসভায় ঘোষণা করেছিলেন , গুরুত্বপূর্ণ কাজ বক্তৃতা বা ভোটের দ্বারা নয় ,তা সম্ভব হবে রক্ত ও লৌহ নীতির দ্বারা অর্থাৎ যুদ্ধ ও কঠোর শৃঙ্খলা বোধের দ্বারা ।
সেই উদ্দেশ্য সফল করার ক্ষেত্রে যদি যুদ্ধের মাধ্যমে রক্তক্ষরণ করতে হয়, তাহলে তিনি সেটাও করতে প্রস্তুত।
অর্থাৎ এক কথায় জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে বিসমার্ক যুদ্ধ করার মাধ্যমে বা রক্ত ঝরানোর মাধ্যমে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে যে সুদৃঢ় বা কঠিন মানসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন, তাই হলো বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ নীতি।
রক্ত ও লৌহ নীতির প্রয়োগ :
বিসমার্ক উপলব্ধি করেছিলেন যে, জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করতে গেলে একমাত্র সামরিক শক্তির জেরেই তা সম্ভব।
এজন্য তিনি প্রাশিয়ার প্রতিনিধি সভার মত অগ্রাহ্য করেন এবং প্রাশিয়ার সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে নজর দেন।
এই উদ্দেশ্যে১৮৬৪ খ্রি: থেকে ১৮৭০ খ্রি: মধ্যে বিসমার্ক তিনটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের মাধ্যমে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
এই তিনটি যুদ্ধ হল – (i) ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ, (ii) ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ এবং (iii) ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধ।
বিসমার্কের কূটনৈতিক দক্ষতার ফলেই প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়াম জার্মানির সম্রাট বা কাইজার বলে ঘোষিত হন ১৮৭১ খ্রি: ।
মূল্যায়ন :
কূটনীতির জাদুকর বিসমার্ক কুটকৌশল এবং ‘রক্ত ও লৌহ নীতি’র দ্বারা জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।এককথায় বলতে গেলে বিসমার্কের কাছে ন্যায়নীতির চেয়ে বাস্তব কূটনীতিই ছিল মুখ্য বিষয়।
আরো পড়ুন – জোলভেরাইন কি
FAQs On – বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ নীতি কি
প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী অটোভন বিসমার্ক প্রাশিয়ার আইনসভায় ঘোষণা করেছিলেন , গুরুত্বপূর্ণ কাজ বক্তৃতা বা ভোটের দ্বারা নয় ,তা সম্ভব হবে রক্ত ও লৌহ নীতির দ্বারা অর্থাৎ যুদ্ধ ও কঠোর শৃঙ্খলা বোধের দ্বারা ।
রক্ত ও লৌহ নীতি কে প্রবর্তন করেন ?
রক্ত ও লৌহ নীতি প্রবর্তন করেন বিসমার্ক
বিসমার্ক ১৮১৫ খ্রি: বান্ডেনবার্গের অন্তর্গত শোনহাউজেন অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন ।বিসমার্ক ছিলেন জুঙ্কার বা জমিদার পরিবারের সন্তান ।তিনি বার্লিন ও গাটিংজেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন । প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিক উইলিয়ামের মৃত্যুর পর তাঁর ভাই প্রথম উইলিয়াম প্রাশিয়ার রাজা হওয়ার পর ১৮৬২ খ্রি: বাস্তববাদী ও রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ বিসমার্ককে তাঁর প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন ।
বিসমার্ক ছিলেন প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ।
বিসমার্কের পুরো নাম অটো লিওপোল্ড ভন বিসমার্ক ।