চৌরিচৌরার ঘটনা কি – ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ৫ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলায় চৌরিচৌরা নামক স্থানে ভগবান আহির নামে এক স্বেচ্ছাসেবকের উপর পুলিশ অকথ্য অত্যাচার করে। পুলিশ বিনা প্ররোচনায় জনতার উপর গুলি চালায়। ফলে উত্তেজিত জনতা চৌরিচৌরা থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ২২ জন পুলিশকর্মী মারা যায় । এই ঘটনা চৌরিচৌরা ঘটনা নামে পরিচিত।
এই পৃষ্ঠায়
চৌরিচৌরার ঘটনা কি :
আরো পড়ুন : চম্পারণ সত্যাগ্রহ সম্পর্কে আলোচনা করো
চৌরিচৌরার ঘটনা :
ভূমিকা :
অসহযোগ আন্দোলনের মূলপর্বে ভারতবাসী যখন ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সোচ্চার সেই সময়ে ভারতবাসীদের উপর ইংরেজদের অকথ্য নির্যাতনের নিদর্শন হলো এই চৌরিচৌরার ঘটনা ।
চৌরিচৌরার অবস্থান :
চৌরিচৌরা হলো একটি গ্রামের নাম। এই গ্রামটি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলায় অবস্থিত।
চৌরিচৌরার ঘটনার প্রেক্ষাপট :
ভারতবর্ষ যখন একদিকে অসহযোগ আন্দোলনে উত্তাল তখন উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর জেলায় এক কংগ্রেসি স্বেচ্ছাসেবকের উপর পুলিশ অকথ্য অত্যাচার করলে চৌরিচৌরার ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ।
চৌরিচৌরার ঘটনা :
১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ৫ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলায় চৌরিচৌরা নামক স্থানে ভগবান আহির নামে এক স্বেচ্ছাসেবকের উপর পুলিশ অকথ্য অত্যাচার করে।
পুলিশ বিনা প্ররোচনায় জনতার উপর গুলি চালায়। ফলে উত্তেজিত জনতা চৌরিচৌরা থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ২২ জন পুলিশকর্মী মারা যায় । এই ঘটনা চৌরিচৌরা ঘটনা নামে পরিচিত ।
অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার :
গান্ধিজি চৌরিচৌরার এই হিংসাত্মক ঘটনায় মর্মাহত হয়ে অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন ।
গান্ধিজি ইয়ং ইন্ডিয়া পত্রিকায় লেখেন ভারতে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন পরিচালনা করার মতো পরিবেশ ও পরিস্থিতি এখন আর নেই।
তিনি মনে করেন আন্দোলন স্থগিত না করলে সারাদেশ এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে অবতীর্ণ হত।
অন্যান্য নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া :
গান্ধিজির এই সিদ্ধান্তকে সেদিন জাতীয় কংগ্রেসের অনেকেই মেনে নিতে পারেননি।
সুভাষচন্দ্র বসু একে ‘এক জাতীয় বিপর্যয়’ বলে আখ্যায়িত করেন। সাধারণ মানুষও গান্ধিজির সিদ্ধান্তে হতাশ হন।
মতিলাল নেহেরু মনে করেন চৌরিচৌরার ঘটনায় মুষ্টিমেয় জনতার তাৎক্ষণিক উত্তেজনার জন্য তিনি সমস্ত জাতিকে শাস্তি দিলেন।
চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব :
অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের পর্বে ঘটে যাওয়া এই চৌরিচৌরার মতো রক্তক্ষয়ী ঘটনার গুরুত্ব কোনো অংশেই কম নয় ।
(১) চৌরিচৌরার ঘটনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মনে এটা স্পষ্ট হয়েছিল যে শুধুমাত্র আবেদন-নিবেদন করেই কোনোদিন ভারতবাসীদের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয় ।
(২) এই ঘটনার মাধ্যমে ভারতবাসী বৃহত্তর কোনো জাতীয় আন্দোলন সংঘটনে মুখর হয়েছিল ।
(৩) এই ঘটনা গান্ধিজির জনপ্রিয়তাকে যে অনেকাংশে লঘু করে দিয়েছিল তা নিশ্চিত করে বলা যায় ।
(৪) এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গান্ধীজি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলে কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়ে যায় ।
মূল্যায়ন :
অসহযোগ আন্দোলনপর্বে সংঘটিত এই রক্তক্ষয়ী ঘটনা ভারতবাসীকে সশস্ত্র আন্দোলনের পথ বেছে নিতে সোচ্চার করেছিল ।
আরো পড়ুন – মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা টীকা লেখ
FAQs On – চৌরিচৌরার ঘটনা কি
চৌরিচৌরা ঘটনা ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ১৯২২ সালে হয়েছিল ।
১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ৫ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলায় চৌরিচৌরা নামক স্থানে ভগবান আহির নামে এক স্বেচ্ছাসেবকের উপর পুলিশ অকথ্য অত্যাচার করে। পুলিশ বিনা প্ররোচনায় জনতার উপর গুলি চালায়। ফলে উত্তেজিত জনতা চৌরিচৌরা থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ২২ জন পুলিশকর্মী মারা যায় । এই ঘটনা চৌরিচৌরা ঘটনা নামে পরিচিত।
চৌরিচৌরায় ২২ জন পুলিশ মারা গিয়েছিল ।