ডি ডে বা মুক্তি দিবস কী – ১৯৪৪ খ্রি: ৬ ই জুন ফ্রান্সে মিত্রপক্ষের সেনাবাহিনীর অবতরণের দিন স্থির হয় । এই দিনটিকে বলা হয় ডি ডে বা মুক্তি দিবস ।
এই পৃষ্ঠায়
ডি ডে বা মুক্তি দিবস কী :
আরো পড়ুন – বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ নীতি কি
ডি ডে বা মুক্তি দিবস :
ভূমিকা :
১৯৪৪ খ্রি: ৬ ই জুন ফ্রান্সে মিত্রপক্ষের সেনাবাহিনীর অবতরণের দিন স্থির হয় । এই দিনটিকে বলা হয় ডি ডে বা মুক্তি দিবস ।
প্রেক্ষাপট :
(ক) দ্বিতীয় রণাঙ্গন খোলার দাবি :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় পূর্ব রণাঙ্গনে রাশিয়া ও জার্মানির মধ্যে তীব্র যুদ্ধ চলতে থাকে।
এই অবস্থায় জার্মান আক্রমণের চাপ কমানোর জন্য রাশিয়া মিত্রশক্তির কাছে পশ্চিম দিকে জার্মানির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় রণাঙ্গন খোলার দাবি জানায়।
(খ) তেহরান বৈঠক :
ইউরােপের পশ্চিম দিকে দ্বিতীয় রণাঙ্গন খােলার জন্য আলােচনার লক্ষ্যে ১৯৪৩ খ্রি: নভেম্বর মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল , রুশ রাষ্ট্রপ্রধান জোসেফ স্টালিন এবং আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক ডি রুজভেল্ট তেহরান বৈঠকে মিলিত হন ।
এই বৈঠকে চার্চিল প্রস্তাব রাখেন ইতালিতে মিত্রপক্ষের সেনাবাহিনীর অবতরণ ঘটানাে হােক ।
রুজভেল্ট পালটা প্রস্তাব রেখে জানান উত্তর ফ্রান্সের নর্মান্ডিতে মিত্রপক্ষের সেনাবাহিনীর অবতরণ ঘটানাে উচিত। বৈঠকে রুজভেল্টের প্রস্তাব গৃহীত হয় ।
(গ) জার্মানির বিরুদ্ধে রণাঙ্গন খোলার প্রস্তুতি :
মার্কিন সেনাপতি আইজেন হাওয়ার-এর নেতৃত্বে উত্তর ফ্রান্সের নর্মান্ডি উপকূলে জার্মানির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় রণাঙ্গন খোলা হয়।
বিমান হানা :
তেহরান বৈঠকে ঠিক হয়েছিল প্রথমে ৩৬ ডিভিশন ও পরে ১০ ডিভিশন সেনা নর্মান্ডিতে অবতরণ করবে । এই সেনাবাহিনীর মধ্যে থাকবে ১০ হাজার বিমান ।
মিত্রপক্ষের সেনাবাহিনীতে মার্কিন , ডাচ , ব্রিটিশ , ফরাসি , পােল , কানাডিয়ান ও গ্রিক প্রভৃতি সৈন্যের সমাবেশ ঘটেছিল ।
সেনা অবতরণের আগের দিন অর্থাৎ ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের ৫ জুন সন্ধ্যায় মিত্রবাহিনীর প্রায় হাজার খানেক জঙ্গিবিমান ফ্রান্সের উপকূলবর্তী জার্মান প্রতিরক্ষা ঘাঁটিগুলির ওপর প্রবল বােমাবর্ষণ করে ।
এইভাবে ওই অঞ্চলের সমস্ত যােগাযােগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় ।
অপারেশন ওভারলর্ড :
৬ জুন ভোরের মৃদু আলোয় ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে চার হাজারেরও বেশি জাহাজে করে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার মিত্রবাহিনীর সেনা নর্মান্ডি উপকূলে ৬০ মাইল দীর্ঘ এলাকায় ৫ টি স্থানে অবতরণ করে।
তাদের নিরাপত্তার জন্য ১১ হাজার বিমান প্রস্তুত রাখা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর এই অভিযান ‘অপারেশন ওভারলর্ড’ নামে পরিচিত।
মুক্তি দিবস বা ডি ডে :
১৯৪৪ খ্রি: ৬ ই জুন ফ্রান্সে মিত্রপক্ষের সেনাবাহিনীর অবতরণের দিন স্থির হয় । এই দিনটিকে বলা হয় ডি ডে বা মুক্তি দিবস ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসে এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । জার্মানির পক্ষে এই বাহিনীর আক্রমণ প্রতিরোধ করা ছিল অসম্ভব ।
মুক্তি দিবসের আক্রমণের দ্বারা মিত্রবাহিনী ফ্রান্সের বিভিন্ন ভূখণ্ড জার্মানির কাছ থেকে মুক্ত করতে থাকে। মিত্রবাহিনী ২৫ আগস্ট ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস অধিকার করে ।
মূল্যায়ন :
মিত্রপক্ষের সেনাবাহিনীর এই সম্মিলিত প্রয়াসের ফলে ১৯৪৪ খ্রি: সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই জার্মান বাহিনীর ঘাঁটিগুলি বিধ্বস্ত হয়েছিল । এমনকি মিত্রবাহিনী জার্মানির কবল থেকে ফ্রান্সের বিভিন্ন ভুখন্ড মুক্ত করতেও সক্ষম হয়েছিল ।
আরো পড়ুন – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
FAQs On – ডি ডে বা মুক্তি দিবস কী
১৯৪৪ খ্রি: ৬ ই জুন ফ্রান্সে মিত্রপক্ষের সেনাবাহিনীর অবতরণের দিন স্থির হয় । এই দিনটিকে বলা হয় ডি ডে বা মুক্তি দিবস ।
১৯৪৪ খ্রি: ৬ ই জুন ডি ডে স্থির হয় ।
ডি ডে পালন করা হয় কবে ?
ডি ডে পালন করা হয় ৬ ই জুন ।