উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য

উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য – যে নদীগুলি মূলত হিমালয় পর্বতমালা থেকে উৎপত্তিলাভ করেছে এবং বরফগলা জলে পুস্ট সেই নদীগুলিকে উত্তর ভারতের নদী বলে । আর যে নদীগুলি মূলত দাক্ষিণাত্যের মালভূমি থেকে উৎপত্তিলাভ করেছে এবং বৃষ্টির জলে পুস্ট সেই নদীগুলিকে দক্ষিণ ভারতের নদী বলে ।

উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য :

উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য

আরো পড়ুন – আরোহণ ও অবরোহণ পদ্ধতি আলোচনা করো

উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য :

বিষয় উত্তর ভারতের নদী দক্ষিণ ভারতের নদী
সংজ্ঞা যে নদীগুলি মূলত হিমালয় পর্বতমালা থেকে উৎপত্তিলাভ করেছে এবং বরফগলা জলে পুস্ট সেই নদীগুলিকে উত্তর ভারতের নদী বলে ।যে নদীগুলি মূলত দাক্ষিণাত্যের মালভূমি থেকে উৎপত্তিলাভ করেছে এবং বৃষ্টির জলে পুস্ট সেই নদীগুলিকে দক্ষিণ ভারতের নদী বলে ।
উৎসএই নদীগুলির উৎস মূলত হিমালয় পর্বতমালা ।এই নদীগুলির উৎস দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চল
বয়স এরা বয়সে অপেক্ষাকৃত নবীন ।এরা বয়সে প্রাচীন ।
অববাহিকার
আয়তন

এদের অববাহিকার আয়তন বেশী  ।
এদের অববাহিকার আয়তন কম ।
নাব্যতানদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে এবং সমভূমি অঞ্চলে নদীর গতি কম, এজন্য নৌপরিবহণের উপযােগী।নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে না এবং মালভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার জন্য খরস্রোতা। তাই নদীগুলি নৌপরিবহণের উপযােগী নয়।
নদীর দৈর্ঘ্যনদীগুলি দৈর্ঘ্যে খুব বড়াে।নদীগুলি দৈর্ঘ্যে অপেক্ষাকৃত ছােটো। 
জলসেচের সুবিধানদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে বলে জলসেচের সুবিধা হয়। বাঁধ দিয়ে জল ধরে না রাখলে সারাবছর জলসেচ করা যায় না।
উপনদী-শাখানদীর সংখ্যা উপনদী ও শাখানদীর সংখ্যা অনেক বেশি।উপনদী ও শাখানদীর সংখ্যা কম।
বদ্বীপ প্রতিটি নদী মােহনায় বদ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে।বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি বললেই চলে ।
গতিবেগ গতিবেগ উচ্চগতিতে তীব্র কিন্তু মধ্যগতি ও নিম্নগতিতে কম ।এরা খরস্রোতা হওয়ায় সমগ্র গতিপথ জুড়েই গতিবেগ বেশী ।
গতিপথের
স্পষ্টতা
উচ্চগতি , মধ্যগতি ও নিম্নগতি –এই তিন প্রকার গতিই এদের সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্যণীয় ।গতিপথের পর্যায়গুলি অস্পষ্ট প্রকৃতির ।
বিদ্যুৎ উৎপাদনএই নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে অনুপযুক্ত ।এই নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে উপযুক্ত ।
বন্যার প্রকোপনদীবক্ষ পলি দ্বারা ভরাট হয়ে থাকায় বর্ষাকালে দুকূল ছাপিয়ে
বন্যা দেখা যায় ।
নদীবক্ষ পলিমুক্ত থাকায় বন্যার প্রকোপ অপেক্ষাকৃত অনেক কম ।
অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদঅশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের উপস্থিতি দেখা যায় ।অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের উপস্থিতি দেখা যায় না বললেই চলে ।
জলের পরিমাণএই নদীগুলি বরফগলা জলে পুষ্ট হওয়ায় নদীতে জলের পরিমাণ অনেক বেশী ।এই নদীগুলি বৃষ্টির জলে পুষ্ট হওয়ায় নদীতে
জলের পরিমাণ অনেক কম ।
ভূমিভাগের
প্রকৃতি
নদীগুলি কোমল শিলাগঠিত ভূমিভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ।নদীগুলি কঠিন শিলাগঠিত ভূমিভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ।
ঢালের
প্রকৃতি
এই নদীগুলির নদীখাতের ঢাল সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় ।এই নদীগুলির নদীখাতের ঢাল সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় ।
পলির
পরিমাণ
এই নদীগুলিতে পলির পরিমাণ অনেক বেশী ।এই নদীগুলিতে পলির পরিমাণ
অপেক্ষাকৃত কম ।
নিত্যবহতাবরফগলা জলে পুষ্ট হওয়ায় এই নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে অর্থাৎ এগুলি নিত্যবহ ।বৃষ্টির জলে পুষ্ট হওয়ায় এই নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে না অর্থাৎ এগুলি অনিত্যবহ ।
নদীর প্রবাহপথে নির্মিত খাতনদীগুলি অনেকটা পথ পার্বত্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে নদীর খাত খুব গভীর (সংকীর্ণ ‘v’ বা ‘I’ আকৃতির)। পার্বত্য উপত্যকার দৈর্ঘ্য কম এবং পার্বত্য অঞ্চলে নদীর খাত বিশেষ গভীর নয়।
 মৃত্তিকা
স্তরের গভীরতা
নদীগুলির অববাহিকা অঞ্চলে মৃত্তিকা
স্তরের গভীরতা বেশী ।
 নদীগুলির অববাহিকা অঞ্চলে মৃত্তিকা
স্তরের গভীরতা কম ।
মিয়েন্ডারএই অঞ্চলের নদীগুলিতে যথেষ্ট পরিমাণে মিয়েন্ডার দেখা যায় ।এই অঞ্চলের নদীগুলিতে মিয়েন্ডার দেখা যায় না বললেই চলে ।

আরো পড়ুন – পশ্চিমবঙ্গের নদী তীরবর্তী শহরের নাম 

FAQs On – উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য

উত্তর ভারতের নদনদীর বৈশিষ্ট্য লেখো ।

উত্তর ভারতের নদনদীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল – (ক) এই নদীগুলির উৎস মূলত হিমালয় পর্বতমালা । (খ) নদীগুলি দৈর্ঘ্যে খুব বড়াে। (গ) এই নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে অনুপযুক্ত । (ঘ) প্রতিটি নদী মােহনায় বদ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে। (ঙ) এরা বয়সে অপেক্ষাকৃত নবীন ।

দক্ষিণ ভারতের নদনদীর বৈশিষ্ট্য লেখো ।

দক্ষিণ ভারতের নদনদীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল – (ক) এই নদীগুলির উৎস দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চল (খ) নদীগুলি দৈর্ঘ্যে অপেক্ষাকৃত ছােটো। (গ) এরা বয়সে প্রাচীন । (ঘ) এই নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে উপযুক্ত । (ঙ) এরা খরস্রোতা হওয়ায় সমগ্র গতিপথ জুড়েই গতিবেগ বেশী ।

উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি নদীর নাম উল্লেখ করো ।

উত্তর ভারতের নদনদী হল – গঙ্গা, সিন্ধু , ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি। দক্ষিণ ভারতের নদনদী – গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, মহানদী, নর্মদা , তাপ্তি প্রভৃতি।

উত্তর ভারতের নদী গুলির নাম লেখো ।

উত্তর ভারতের নদী গুলির নাম হল – গঙ্গা, সিন্ধু , ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি ।

দক্ষিণ ভারতের নদী গুলির নাম লেখো ।

দক্ষিণ ভারতের নদী গুলির নাম হল – গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, মহানদী, নর্মদা, তাপ্তি প্রভৃতি।

মন্তব্য করুন