দলিত আন্দোলন বিষয়ে গান্ধী আম্বেদকর বিতর্ক

দলিত আন্দোলন বিষয়ে গান্ধী আম্বেদকর বিতর্ক – দলিত কথাটি এসেছে দলন শব্দ থেকে, যার অর্থ হলো দমিয়ে রাখা ।সমাজের উচ্চবর্ণের মানুষ নিম্নবর্ণের যেসব মানুষদের দমিয়ে বা পদদলিত করে রাখে , তাদের দলিত বলা হয় ।

দলিত আন্দোলন বিষয়ে গান্ধী আম্বেদকর বিতর্ক :

দলিত আন্দোলন বিষয়ে গান্ধী আম্বেদকর বিতর্ক

আরো পড়ুন – পত্তি শ্রীরামালু স্মরণীয় কেন

ভূমিকা :

দলিত কথাটি এসেছে দলন শব্দ থেকে, যার অর্থ হলো দমিয়ে রাখা ।সমাজের উচ্চবর্ণের মানুষ নিম্নবর্ণের যেসব মানুষদের দমিয়ে বা পদদলিত করে রাখে , তাদের দলিত বলা হয় ।

দলিত শ্রেণীর অধিকার নিয়ে গান্ধীজী এবং আম্বেদকর – এর মধ্যে দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে (১৯৩১) বিতর্ক হয়েছিল। আর এখান থেকেই উভয়ের মধ্যে দলিত শ্রেণীর অধিকার নিয়ে বিতর্কের পটভূমি তৈরি হয়।

দলিত অধিকারের বিভিন্ন বিষয়ে গান্ধী আম্বেদকর বিতর্ক :

(ক) অস্পৃশ্যতা বিষয়ে বিতর্ক :

আম্বেদকর অস্পৃশ্য দলিতদের হিন্দু সমাজ থেকে আলাদা করার কথা বলেন এবং অস্পৃশ্যদের জন্য একটি আলাদা গোষ্ঠীর স্বীকৃতি আদায় করতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু গান্ধীজী অস্পৃশ্যদের আলাদা গোষ্ঠীর স্বীকৃতি দিতে চাননি। তিনি মানবতাবাদি দৃষ্টিভঙ্গিতে সমাজ থেকেই অস্পৃশ্যতা দূর করার উপর গুরুত্ব দেন।

(খ) বর্ণ ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক :

আম্বেদকর বর্ণ ব্যবস্থা বিলোপের পক্ষপাতী ছিলেন ।

কিন্তু গান্ধীজী বর্ণ ব্যবস্থার সমর্থক ছিলেন। গান্ধীজীর মতে বর্ণ ব্যবস্থা ভারতীয় জাতির ভিত্তি স্বরূপ। তিনি বর্ণ ব্যবস্থা বিলোপ না করে এই ব্যবস্থায় সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কার চেয়ে ছিলেন।

(গ) পৃথক নির্বাচন বিষয়ে বিতর্ক :

1928 সালে আম্বেদকর দলিতদের জন্য পৃথক নির্বাচন মণ্ডলীর দাবি করেন। 1931 সালে দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে দলিতদের জন্য আইন সভায় সংরক্ষণের দাবি জানান ।

কিন্তু গান্ধীজী বলেন দলিতরা সংখ্যালঘু নয়, তারা হিন্দু সম্প্রদায় ভুক্ত তাই তিনি আলাদা নির্বাচনের অধিকার দাবির বিরোধিতা করেন।

(ঘ) সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা ঘোষণা ও পুনা চুক্তি স্বাক্ষর :

আম্বেদকর দলিতদের জন্য পৃথক নির্বাচন মণ্ডলীর দাবি করলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডোনাল্ড 1932 সালে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষণা করে ।

এর প্রতিবাদে গান্ধীজী যারবেদা জেলে আমরণ অনশন শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত 1932 সালে পুনা চুক্তির মাধ্যমে গান্ধীজী ও আম্বেদকর এর মধ্যে সমঝোতা হয়।

এই চুক্তি অনুসারে –

  • ১. দলিতদের পৃথক নির্বাচনের বিষয়টি বাতিল করা হয় ।
  • ২. কেন্দ্রীয় আইনসভায় দলিতদের জন্য ১৮% আসন সংরক্ষণ করা হয় ।

মূল্যায়ন :

দলিত অধিকার বিষয়ে গান্ধী আম্বেদকর বিরোধের মীমাংসা হয়নি। গান্ধীজী হরিজন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অস্পৃশ্যতা দূর করার চেষ্টা করেন। যদিও গান্ধীজী বর্ণ ব্যবস্থা বিলোপের জন্য কোন আন্দোলন করেননি অন্যদিকে আম্বেদকর দরিদ্রের জন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান।  

আরো পড়ুন – রশিদ আলী দিবস কেন পালিত হয়

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন – www.youtube.com/@DRMonojog

পিডিএফ পেতে ভিজিট করুন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল – DR Monojog63

FAQs On – দলিত আন্দোলন বিষয়ে গান্ধী আম্বেদকর বিতর্ক

দলিত কাদের বলা হয় ?

দলিত কথাটি এসেছে দলন শব্দ থেকে, যার অর্থ হলো দমিয়ে রাখা ।সমাজের উচ্চবর্ণের মানুষ নিম্নবর্ণের যেসব মানুষদের দমিয়ে বা পদদলিত করে রাখে , তাদের দলিত বলা হয় ।

পুনা চুক্তি কী ?

আম্বেদকর দলিতদের জন্য পৃথক নির্বাচন মণ্ডলীর দাবি করলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডোনাল্ড 1932 সালে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষণা করে ।
এর প্রতিবাদে গান্ধীজী যারবেদা জেলে আমরণ অনশন শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত 1932 সালে পুনা চুক্তির মাধ্যমে গান্ধীজী ও আম্বেদকর এর মধ্যে সমঝোতা হয়।
এই চুক্তি অনুসারে –
১. দলিতদের পৃথক নির্বাচনের বিষয়টি বাতিল করা হয় ।
২. কেন্দ্রীয় আইনসভায় দলিতদের জন্য ১৮% আসন সংরক্ষণ করা হয় ।

মন্তব্য করুন