ঘেটো কী

ঘেটো কী – শিল্প-শহরের একটি বিশেষ অঞ্চলকে মূলত ঘেটো বলা হতো । যেখানে সামাজিক, অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষরা তাদের বসবাসের জায়গা হিসাবে বেছে নিয়েছিল।

ঘেটো কী :

ঘেটো কী

আরো পড়ুন – জোলভেরাইন কি

ভূমিকা :

অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে ইউরোপে শিল্প বিপ্লব শুরু হলে সমাজে শিল্পায়নের বিশেষ প্রভাব পরিলক্ষিত হয় ।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশের শিল্পের প্রসারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যক্ষ ফল ছিল ঘেটো নামক এক ধরণের বসতির প্রতিষ্ঠা ও প্রসার।

শিল্প-শহরের একটি বিশেষ অঞ্চলকে মূলত ঘেটো বলা হতো । যেখানে সামাজিক, অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষরা তাদের বসবাসের জায়গা হিসাবে বেছে নিয়েছিল।

ঘেটোর ধারণা :

ঘেটো বলতে সর্বপ্রথম ইতালির ভেনিস শহরের একটি নির্দিষ্ট অংশকে বোঝানো হত। যেখানে সাধারণত ইহুদী জাতির মানুষেরা বসবাস করত।

পরবর্তীকালে বহিরাগত মানুষদের বসবাসের নির্দিষ্ট অঞ্চল ঘেটো নামে পরিচিত হয় ।

ঘেটো গড়ে ওঠার কারণ :

ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের সময় প্রচুর পরিমাণে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলে সেখানে শ্রমিকশ্রেণীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সেখানকার সমাজের উচ্চবিত্ত এবং সাধারণ মানুষের জীবন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরে যায় ।

কিন্তু শ্রমিকশ্রেণী সবসময়ই দারিদ্র্য রেখার নিচেই থাকতো। তাদের মধ্যে দুঃখ, দারিদ্র্য, বঞ্চনা ইত্যাদি লেগেই থাকতো।

এই সমস্ত কারণেই শ্রমিকশ্রেণী শহরের উচ্চবিত্ত এবং স্বাভাবিক সাধারণ মানুষদের থেকে দূরে থাকার জন্য শহর থেকে একটি নিরিবিলি জায়গা বেছে নেয় এবং সেখানে তারা নিজেদের জন্যে গড়ে তোলে ঘেটো।

ঘেটোর প্রসার :

ইউরোপে মূলত শিল্প বিপ্লব ঘটার ফলে ইউরোপের ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স-সহ বিভিন্ন দেশের গ্রামাঞ্চলে যে সব মানুষ বসবাস করতো তা মূলত কুটিরশিল্প এবং কৃষিকাজে লিপ্ত ছিল ।

তারা গ্রাম ছেড়ে কলকারখানায় কাজের উদ্দেশ্যে শহরে এসে ভিড় জমাতে থাকে।

গ্রাম থেকে আসা এইসব মানুষদের খুব কম মজুরিতে কলকারখানায় কাজ করতে হত। এইসব মানুষদের বসবাসের স্থান ছিল শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চল অর্থাৎ ঘেটো অঞ্চল।

ঘেটোর নাগরিক জীবন :

ঘেটো অঞ্চলে বসবাসরত মানুষেরা ছিল মূলত হতদরিদ্র। তারা শহরের প্রত্যন্ত ঘিঞ্জি বস্তি অঞ্চলে বসবাস করত।

এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘেটোর মানুষজন দুঃখ, দারিদ্র্য, বঞ্চনার মধ্যে বসবাস করত। অতিকষ্টে এইসব মানুষদের দিন কাটত।

মূল্যায়ন :

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারি ঘেটোর নাগরিক জীবন ছিল দূর্বিষহ ।

মালিক শ্রেণির শোষণের বিরুদ্ধে এইসব মানুষরা ক্রমে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করে।

ধীরে ধীরে শ্রমিকরা নিজেদের সংগঠন তৈরি করে এবং নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন আন্দোলন শুরু করে ।

আরো পড়ুন – এমস টেলিগ্রাম কি 

FAQs On – ঘেটো বলতে কি বোঝো

ঘেটো কী ?

শিল্প-শহরের একটি বিশেষ অঞ্চলকে মূলত ঘেটো বলা হতো । যেখানে সামাজিক, অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষরা তাদের বসবাসের জায়গা হিসাবে বেছে নিয়েছিল।

ঘেটো বলতে মূলত কোন অঞ্চলকে বোঝানো হতো ।

ঘেটো বলতে সর্বপ্রথম ইতালির ভেনিস শহরের একটি নির্দিষ্ট অংশকে বোঝানো হত। যেখানে সাধারণত ইহুদী জাতির মানুষেরা বসবাস করত।

ঘেটোর নাগরিক জীবন কেমন ছিল ?

ঘেটো অঞ্চলে বসবাসরত মানুষেরা ছিল মূলত হতদরিদ্র। তারা শহরের প্রত্যন্ত ঘিঞ্জি বস্তি অঞ্চলে বসবাস করত। এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘেটোর মানুষজন দুঃখ, দারিদ্র্য, বঞ্চনার মধ্যে বসবাস করত। অতিকষ্টে এইসব মানুষদের দিন কাটত।

ঘেটো গড়ে ওঠার কারণ কি ছিল ?

ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের সময় প্রচুর পরিমাণে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলে সেখানে শ্রমিকশ্রেণীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সেখানকার সমাজের উচ্চবিত্ত এবং সাধারণ মানুষের জীবন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরে যায় ।কিন্তু শ্রমিকশ্রেণী সবসময়ই দারিদ্র্য রেখার নিচেই থাকতো। তাদের মধ্যে দুঃখ, দারিদ্র্য, বঞ্চনা ইত্যাদি লেগেই থাকতো। এই সমস্ত কারণেই শ্রমিকশ্রেণী শহরের উচ্চবিত্ত এবং স্বাভাবিক সাধারণ মানুষদের থেকে দূরে থাকার জন্য শহর থেকে একটি নিরিবিলি জায়গা বেছে নেয় এবং সেখানে তারা নিজেদের জন্যে গড়ে তোলে ঘেটো।

মন্তব্য করুন