লীলা নাগ স্মরণীয় কেন

লীলা নাগ স্মরণীয় কেন – সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজকে বীরদর্পে এগিয়ে আনতে যিনি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি আর কেউ নন তিনি হলেন লীলা নাগ ।

লীলা নাগ স্মরণীয় কেন :

লীলা নাগ স্মরণীয় কেন

আরো পড়ুন – মাতঙ্গিনী হাজরা স্মরণীয় কেন

লীলা নাগ স্মরণীয় কারণ :

ভূমিকা :

বিংশ শতকে ভারত তথা বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজকে বীরদর্পে এগিয়ে আসার আহ্বান করেছিলেন বাংলার মেয়ে লীলা নাগ । তাঁর নেতৃত্বে বাংলার নারীসমাজ সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে যোগদান করে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনকে আরও সাফল্যমন্ডিত করে তুলেছিল ।

পূর্বপরিচয় :

লীলা নাগের জন্ম হয় ঢাকায় । বেথুন কলেজ থেকে স্নাতক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করার পর বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দলনে যোগ দেন ।

দীপালি সংঘের প্রতিষ্ঠা :

বাংলার নারীসমাজ যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে সশস্ত্র আন্দোলনে যোগদান করতে পারে তার জন্যে লীলা নাগ ঢাকায় দীপালি সংঘ নামে একটি নারী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, বীণা দাস, শান্তি দাস প্রমুখ ছিল এই সংঘের সদস্যা ছিলেন।

দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য :

দীপালি সংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি হল নিম্নরূপ –

(ক) নারী সমাজকে সংঘবদ্ধ করে ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে শামিল করা ।

(খ) মেয়েদের বিপ্লবী আন্দোলন পরিচালনার যোগ্য করে তোলা ।

(গ) উচ্চশিক্ষায় নারীদের উৎসাহদান করা ।

(ঘ) নারীদের মধ্যে আত্মসচেতনতা ও দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলা ।

কার্যকলাপ  :

মেয়েদের সাহস ও শক্তিবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে দীপালি সংঘে নিয়মিত লাঠিখেলা ,শরীরচর্চা, অস্ত্রচালনা শিক্ষা প্রভৃতি শিক্ষা দেওয়া হত।

এ ছাড়া মেয়েদের হাতের কাজ, শিল্পকর্ম প্রভৃতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ‘ দীপালি শিল্প প্রদর্শনী ‘গড়ে তোলা হয় ।

শিক্ষাবিস্তারে ভূমিকা :

লীলা নাগের উদ্যোগে ঢাকায় একটি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় । তাঁর যোগ্য সহকর্মী রেণুকা সেন ছাত্রীদের জন্যে একটি হোস্টেল ও কলকাতায় দীপালি সংঘের একটি শাখা স্থাপন করেন ।

দীপালি সংঘ ঢাকায় 12 টি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। এ ছাড়া তাদের উদ্যোগে দীপালি স্কুল, নারী শিক্ষামন্দির, শিক্ষাভবন প্রভৃতি ইংরেজি উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

লীলা নাগ 1926 খ্রিস্টাব্দে ‘ দীপালি ছাত্রী সংঘ ‘ নামে ভারতের প্রথম ছাত্রী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

পত্রিকা প্রকাশ :

দীপালি সংঘের পক্ষ থেকে 1931 খ্রিস্টাব্দে একটি পত্রিকা প্রকাশ করা হয় । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেরণায় লীলা নাগ এই পত্রিকার নাম রাখেন জয়শ্রী ।

মূল্যায়ন :

লীলা নাগ বাংলার নারী সমাজের মধ্যে জাতীয় চেতনা ও সশস্ত্র বিপ্লববাদী আদর্শ জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন । তিনি শুধু বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ডেই নন ,সমাজকল্যাণেও নিজেকে উজাড় করে দেন। তিনি ন্যাশনাল সার্ভিস ইন্সটিটিউট নামে একটি জনকল্যাণমূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। 1946 খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ভারতীয় সংবিধান রচনায়ও তিনি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আরো পড়ুন – দুদুমিঞা স্মরণীয় কেন

FAQs On – লীলা নাগ স্মরণীয় কেন

লীলা নাগ কোন সংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ?

লীলা নাগ দীপালি সংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ।

দিপালী সংঘ কে প্রতিষ্ঠা করেন ?

দিপালী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন লীলা নাগ ।

দীপালি সংঘের মুখপত্রের নাম কি ?

দীপালি সংঘের মুখপত্রের নাম হল – জয়শ্রী ।

দিপালী সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয় কোথায় ?

দিপালী সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকায় ।

জয়শ্রী পত্রিকাটি প্রকাশ করেন কে কত সালে ?

জয়শ্রী পত্রিকাটি প্রকাশ করেন লীলা নাগ ১৯৩১ সালে ।

লীলা নাগ স্মরণীয় কেন ?

বিংশ শতকে ভারত তথা বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজকে বীরদর্পে এগিয়ে আসার আহ্বান করেছিলেন বাংলার মেয়ে লীলা নাগ । তাঁর নেতৃত্বে বাংলার নারীসমাজ সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে যোগদান করে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনকে আরও সাফল্যমন্ডিত করে তুলেছিল ।

দীপালি ছাত্রী সংঘ কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন ?

দীপালি ছাত্রী সংঘ লীলা নাগ 1926 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন ।

ন্যাশনাল সার্ভিস ইন্সটিটিউট কে প্রতিষ্ঠা করেন ?

ন্যাশনাল সার্ভিস ইন্সটিটিউট লীলা নাগ প্রতিষ্ঠা করেন ।

মন্তব্য করুন