মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি

মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি – আজকের পর্বে আমরা তোমাদের সাথে শিক্ষাবিজ্ঞানের ২০২৪ উচ্চমাধ্যমিকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করলাম ।

মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি :

মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি

আরো পড়ুন – বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা

মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান :

মূক ও বধির শিশুদের মধ্যে যারা আংশিকভাবে বধির তাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে শ্রুতিসহায়ক যন্ত্র ব্যবহার করলে এবং তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিলে তারা স্বাভাবিক ছেলে মেয়েদের মতাে কথাবার্তা বলতে এবং শুনতে পারে।

কিন্তু যারা সম্পূর্ণরূপে মূক ও বধির তাদের জন্য নিম্নলিখিত শিক্ষাদান পদ্ধতি প্রয়ােগ করা হয় –

(১) মৌখিক পদ্ধতি  বা ওষ্ঠ পদ্ধতি :

মনোবিদ জুয়ান পাবলো বুঁনে বধির শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।এই পদ্ধতিতে শিক্ষকের কথা বলার সময় তাঁর ঠোট নড়াচড়া দেখে এই শিশুদের কথা  শিখতে হয়। 

এই শিশুরা কথা বোঝার পাশাপাশি একই ভাবে ঠোঁটের সঞ্চালন ঘটিয়ে  নিজের ভাষাকে অপরকে  বুঝিয়ে থাকে। এই পদ্ধতির আরেক নাম হল মৌখিক পদ্ধতি।

(২) সঞ্চালন পদ্ধতি বা আঙুলের দ্বারা বানান শেখা :

শিক্ষাবিদ পেরিয়ার সঞ্চালন পদ্ধতি বা আঙুলের দ্বারা বানান শেখার এই পদ্ধতি চালু করেন।

এই পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ বধিরদের হাতের আঙুলের সাহায্যে মনের ভাব প্রকাশ করতে সাহায্য করা হয় এবং অক্ষর,শব্দ, বাক্য ও বানান শেখানো হয়। 

এই পদ্ধতির  আরেক নাম হল করপল্লবী

(৩) স্পর্শ পদ্ধতি : 

মনোবিদ কে.টি অ্যালকর্ন এবং সোফিয়া অ্যালকর্ন সর্বপ্রথম এই স্পর্শ পদ্ধতির কথা বলেন। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া।

এই পদ্ধতিতে মূক ও বধির শিশুরা শিক্ষকের কথা বলার সময় তাদের মুখের সামনে গলায়, গালে হাত দিয়ে শব্দ কম্পনের অনুভূতি উপলব্ধি করে শব্দ উচ্চারণ করতে শেখে।

(৪) শ্রবণসহায়ক পদ্ধতি :

শ্রবণ সহায়ক পদ্ধতিটি মূলত আংশিকভাবে বধির ছেলেমেয়েদের পড়ানাের জন্য ব্যবহৃত হয়।

উচ্চশক্তিসম্পন্ন শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের সাহায্যে আংশিক বধিরদের বধিরতা অনেকটা দূর করা যায়। 

(৫) দর্শনভিত্তিক পদ্ধতি :

মুক ও বধির ছেলেমেয়েদের দর্শনভিত্তিক পদ্ধতিতে মনের ভাব প্রকাশের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে কয়েকটি প্রতীক ব্যবহার করা হয়।

শিক্ষক মূক ও বধির ছেলেমেয়েদের এইসব প্রতীকের ব্যবহার শিখিয়ে দেন। তারা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষকের মতাে মুখাকৃতি করে শব্দ উচ্চারণ করার চেষ্টা করে এবং ধীরে ধীরে তা আয়ত্ত করে।

উপরিউক্ত পদ্ধতিগুলির দ্বারা মূক ও বধিরদের শিক্ষাদান করতে গেলে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধৈর্যশীল শিক্ষক- শিক্ষিকার প্রয়ােজন হয়।

বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ধরনের ছেলেমেয়েদের ভাষা বিকাশ ও পাঠদানের জন্য গবেষণা চলছে।

আরো পড়ুন – উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান সাজেশন ২০২৪

“মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি”-এ 4-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন