পার্ল হারবারের ঘটনা কি ছিল – উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত পার্ল হারবার হল একটি বন্দর । এখানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি নৌঘাঁটি ছিল । ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ই ডিসেম্বর জাপানি নৌবহর ও ৩৩৫ টি যুদ্ধবিমান একযােগে আক্রমণ চালিয়ে এই মার্কিন নৌঘাঁটি ধ্বংস করে দেয় । এটিই পার্ল হারবার ঘটনা নামে পরিচিত ।
এই পৃষ্ঠায়
পার্ল হারবারের ঘটনা কি ছিল :
আরো পড়ুন – প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণগুলি আলোচনা করো
ভূমিকা :
প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই দ্বীপে অবস্থিত একটি দ্বীপ হল পার্ল হারবার। এই অঞ্চলে আমেরিকা তার নৌঘাঁটি স্থাপন করেছিল।
ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপান প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং দূরপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে আগ্রাসী নীতি প্রয়োগ করতে শুরু করে।
কিন্তু আমেরিকা জাপানের এই আগ্রাসনের বিরোধিতা করে। ফলে আমেরিকা ও জাপানের সম্পর্কের অবনতি ঘটে ।এর ফলস্বরূপ সংঘটিত হয় পারল হারবারের ঘটনা ।
পার্ল হারবার ঘটনার পটভূমি :
(ক) বাণিজ্য চুক্তি বাতিল :
জাপানের অক্ষশক্তিভুক্ত হওয়ার ফলে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের জাপানের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করে দেয় ।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাপানে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য , বিমান জ্বালানি ইত্যাদি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায় । শুধু তাই নয় , যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত সমস্ত জাপানি সম্পত্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাজেয়াপ্ত করে নেয় ।
(খ) জাপানী আগ্রাসনে মার্কিন বাধা :
জাপান চিনে তার আগ্রাসী নীতির প্রয়ােগ ঘটালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানকে বিমান সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং চিনকে গােপনে সহায়তা করতে থাকে ।
(গ) সমঝোতার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা :
জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিদেকি তোজো আমেরিকার সঙ্গে একটা সমঝােতার বার্তা প্রেরণ করলে আমেরিকা প্রথমেই চিন ও ইন্দোচিন থেকে জাপানি সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানায় ।
জাপান ওই প্রস্তাবে অসম্মত হলে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে ।
আলাপ-আলােচনার মাধ্যমে যুদ্ধ এড়ানাের শেষ চেষ্টা হিসেবে ওয়াশিংটনে যখন দু-পক্ষের বৈঠক চলছিল তখন হঠাৎই পার্ল হারবার ঘটনাটি ঘটে যায় ।
পার্ল হারবার আক্রমণ :
১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ই ডিসেম্বর সকালে বিশাল নৌবহর এবং ৩৩৫ টি যুদ্ধবিমান নিয়ে ভাইস অ্যাডমিরাল নোগুচি-র নেতৃত্বে জাপান, আমেরিকার পার্ল হারবারে বোমাবর্ষণ শুরু করে।
জাপান মার্কিন নৌঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়। এই ঘটনা ইতিহাসে ‘পার্ল হারবারের ঘটনা’ নামে পরিচিত।
পার্ল হারবার আক্রমণের ফলাফল :
(ক) পার্ল হারবারের ঘটনার পরেরদিন আমেরিকা নিরপেক্ষতা নীতি ত্যাগ করে সক্রিয়ভাবে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
(খ) পার্ল হারবারের ঘটনার ফলে আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে ।
(গ) পার্ল হারবারের ঘটনার ফলস্বরূপ প্রাচ্য ভূখণ্ডে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্প্রসারিত হয় ।
মূল্যায়ন :
৭ ই ডিসেম্বর জাপান কর্তৃক আমেরিকার নৌঘাঁটি পার্ল হারবার ধ্বংসের দিনটিকে মার্কিন রাষ্ট্রপতি রুজভেল্ট একটি কলঙ্কিত দিন হিসাবে অভিহিত করেছেন। পার্ল হারবারের ঘটনার মধ্য দিয়ে রচিত হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আরেক রক্তাক্ত কলঙ্কজনক অধ্যায়।
আরো পড়ুন – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
FAQs On – পার্ল হারবারের ঘটনা কি
উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত পার্ল হারবার হল একটি বন্দর । এখানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি নৌঘাঁটি ছিল । ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ই ডিসেম্বর জাপানি নৌবহর ও ৩৩৫ টি যুদ্ধবিমান একযােগে আক্রমণ চালিয়ে এই মার্কিন নৌঘাঁটি ধ্বংস করে দেয় । এটিই পার্ল হারবার ঘটনা নামে পরিচিত ।
৭ ডিসেম্বর, ১৯৪১ সালের ভোরে জাপান পার্ল হারবার আক্রমণ করে
পার্ল হারবার উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পার্ল হারবার আক্রমণ করেছিল জাপান।
পার্ল হারবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শহর
পার্ল হারবারের ঘটনার পরেরদিন আমেরিকা নিরপেক্ষতা নীতি ত্যাগ করে সক্রিয়ভাবে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। পার্ল হারবারের ঘটনার ফলে আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে ।পার্ল হারবারের ঘটনার ফলস্বরূপ প্রাচ্য ভূখণ্ডে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্প্রসারিত হয় ।
জাপানের লক্ষ্য ছিলো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। মার্কিন নৌঘাঁটি পার্ল হারবারে আক্রমণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহর পুরোপুরি ধ্বংস করাই ছিলো তাদের মূল উদ্দেশ্য।