সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা ও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার পার্থক্য

সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা ও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার পার্থক্য – আজ আলোচনা করলাম সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা ও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার পার্থক্য ।

সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা ও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার পার্থক্য :

সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা ও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার পার্থক্য

আরো পড়ুন – মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি

সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা কী :

সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা হলো একটি সচেতন ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া । সুতরাং কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমকে সামনে রেখে শিক্ষক ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা পাঠক্রমের বিষয়গুলি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চালনের মাধ্যমে ডিগ্রী বা ডিপ্লোমা লাভের প্রক্রিয়াকে সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা বলে। 

ব্যাপক অর্থে শিক্ষা কী :

শিশুর জন্ম গ্রহণ করার পর থেকে জীবনকাল ব্যাপী তার ইন্দ্রশক্তি ও মানসিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবেশ থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তাই হলো ব্যাপক অর্থে শিক্ষা।

সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা ও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার পার্থক্যগুলি হল নিম্নরূপ –

নং বিষয় সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা ব্যাপক অর্থে শিক্ষা
অর্থশিক্ষক ও পুস্তকের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনই শিক্ষা ।শিশুর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার পরিপূর্ন বিকাশ সাধনই হল শিক্ষা ।
সংজ্ঞা সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা হলো একটি সচেতন ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া । সুতরাং কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমকে সামনে রেখে শিক্ষক ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা পাঠক্রমের বিষয়গুলি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চালনের মাধ্যমে ডিগ্রী বা ডিপ্লোমা লাভের প্রক্রিয়াকে সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা বলে। শিশুর জন্ম গ্রহণ করার পর থেকে জীবনকাল ব্যাপী তার ইন্দ্রশক্তি ও মানসিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবেশ থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তাই হলো ব্যাপক অর্থে শিক্ষা।
শিক্ষার লক্ষ্যপুথিগত তথ্যপাঠের মাধ্যমে 3R (Reading, Writing and Arithmetic) জ্ঞান অর্জন। অর্থাৎ পঠন, শিখন, ও সরল গণিতের দক্ষতা অর্জন।শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য 7R (Reading, writing, Arithmetic, Recreation, Rights, Responsibilities, Relations) বিষয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন। 
শিক্ষার সময়কালএই ধরনের শিক্ষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শুরু এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেষ হয়। প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ।এই ধরনের শিক্ষা শিশুর জন্মের পর থেকে শুরু হয়ে আমৃত্যু চলতে থাকে। অর্থাৎ এই শিক্ষা সারাজীবন ধরে চলে।
পাঠক্রম নির্দিষ্ট কতকগুলি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরােপ করা হয়। বহুমুখিতাহীন পাঠক্রম।পাঠক্রমে বহুমুখিতা অনুসৃত হয়। তাত্ত্বিক ও ব্যাবহারিক উভয় অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটানাে হয়।
শিক্ষক শিক্ষিকার ভূমিকা শিক্ষক-শিক্ষিকারা তত্ত্বগত জ্ঞানদানে ব্যস্ত থাকেন।অর্থাৎ এক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষিকা সক্রিয় থাকেন ।শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই ক্ষেত্রে বন্ধু, দার্শনিক ও পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেন। অর্থাৎ এক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষিকা নিষ্ক্রিয় থাকেন ।
শিক্ষার্থীর ভূমিকা শিক্ষার্থীরা অনেকটাই নিষ্ক্রিয় থাকে। কেবল গ্রহীতা হিসেবে জ্ঞান গ্রহণ করে।এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা সবসময়ই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
মাধ্যম এই শিক্ষা বিদ্যালয় ও পরিবারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।এই শিক্ষা বিদ্যালয় এবংপরিবার ছাড়াও বেতার, দূরদর্শন, চলচ্চিত্র, প্রেস ইত্যাদির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
শিক্ষাদান কৌশল মৌখিক আলােচনার মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের স্মৃতির ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রচেষ্টা, বাস্তবমুখী জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন, কার্যকারণ ব্যাখ্যা প্রভৃতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
১০শৃঙ্খলাবাহ্যিকশৃঙ্খলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেরাই শৃঙ্খলিত হয়। 
১১শিখন-শিক্ষণে ব্যবহৃত উপকরণ শিখন-শিক্ষণের জন্য তেমন কোনাে উপকরণ ব্যবহার করা হয় না।কম্পিউটার, প্রােজেক্টর, মডেল ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

আরো পড়ুন – সর্বশিক্ষা অভিযানের উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি

FAQs On – সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা ও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার পার্থক্য

ব্যাপক অর্থে শিক্ষা বলতে কী বোঝো ।

শিশু জন্ম গ্রহণ করার পর থেকে জীবনকাল ব্যাপী পরিবেশ থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তাই হলো ব্যাপক অর্থে শিক্ষা।

মন্তব্য করুন