স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করো

স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করো – আজকের পর্বে আমরা তোমাদের সাথে আলোচনা করলাম স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বটির ব্যাখ্যা নিয়ে ।

স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করো

আরো পড়ুন – শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের ভূমিকা

স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্ব :

আমেরিকান মনোবিদ বি.এফ. স্কিনার ১৯৩০ সালে National Academy of Science পত্রিকায় “the concept of the reflex in the description of the behaviour” নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। এই প্রবন্ধে তিনি সক্রিয় অনুবর্তন  বা অপারেন্ট অনুবর্তন এর ধারণা দেন।  অপারেন্ট কথাটির আক্ষরিক অর্থ হলো ” ফলোৎপাদনের জন্য প্রতিক্রিয়া “

স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বটির ব্যাখ্যা :

পরীক্ষা :

স্কিনার বিভিন্ন প্রাণীকে নিয়ে বহু রকমের পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন, তার মধ্যে বিশেষ পরীক্ষামূলক শিখন কৌশলটি হল সক্রিয় অনুবর্তন বা অপারেন্ট অনুবর্তন ।

উপকরণ :

স্কিনার তাঁর পরীক্ষার জন্য একটি ক্ষুধার্ত ইদুর এবং কিছু উপকরণ যেমন – স্কিনার বক্স, একটি ট্রে এবং খাদ্যবস্তু ব্যবহার করেন।

স্কিনার বক্সের বর্ণনা :

স্কিনার তাঁর সক্রিয় অনুবর্তন বা অপারেন্ট অনুবর্তন পরীক্ষার জন্য যে বিশেষ ধরনের যান্ত্রিক ব্যবস্থা ব্যবহার করেন তা স্কিনার বক্স নামে পরিচিত। এই বক্সটি বিশেষভাবে তৈরি, এতে একটি ট্রে এবং লিভার থাকে। ট্রে টি এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যার সঙ্গে লিভারটি  যুক্ত থাকে। লিভারটিতে চাপ দিলে ট্রেতে খাবার চলে আসে।

পরীক্ষা পরিস্থিতি ও পর্যবেক্ষণ:

 স্কিনার ক্ষুধার্ত ইঁদুরটিকে বক্সের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন, তারপর তিনি পর্যবেক্ষণ করেন। –

প্রথম পর্যায় :  

স্কিনার  ইঁদুরটিকে বক্সের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয় এবং ট্রেতে  কিছু খাদ্য আগে থেকে দেওয়া ছিল, ইঁদুরটি সেই  খাদ্য গ্রহণ করে। এই  পর্যায়ে স্কিনার লিভারের চাপ দিয়ে খাদ্য নিয়ে আসেনি। খাদ্য গ্রহণ এবং পরীক্ষামূলক পরিস্থিতির সঙ্গে ইঁদুরটির  কেবলমাত্র পরিচিতি ঘটান ।

দ্বিতীয় পর্যায় :  

পরেরদিন ইঁদুরটিকে বক্সে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এবং যান্ত্রিক কৌশল এর সাহায্যে ট্রেতে খাদ্য আনা হয়। এই পর্যায়ে  লিভারের চাপ দিয়ে ট্রেতে খাদ্য আনা হয়েছে, যাতে বক্সের পরিস্থিতি সম্পর্কে ইঁদুরের পরিচিতি ঘটে ।

তৃতীয় পর্যায় : 

এই পর্যায়ে স্কিনার ইঁদুরটিকে খাদ্য না দিয়ে পুনরায় বক্সে ঢুকিয়ে দেয়।  ইঁদুরটি ট্রেটির  দিকে দৌড়ে যায় খাদ্যের জন্য, কিন্তু খাদ্য না পেয়ে নানারকম অনুসন্ধানমূলক প্রতিক্রিয়া করতে থাকে। এইভাবে হঠাৎ একসময় ইঁদুরটি লিভারের চাপ দেয় এবং ট্রেতে খাদ্য চলে আসে।  ইঁদুরটি সেই  খাদ্য গ্রহণ করে।

শেষ পর্যায় : 

স্কিনার এই পরীক্ষাটি বার বার পুনরাবৃত্তি করার পর লক্ষ্য করেন, ইঁদুরটিকে বক্সের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া মাত্র সোজা গিয়ে লিভারে চাপ দেয় এবং ট্রেতে খাবার নিয়ে আসে।  অর্থাৎ ইঁদুরটির লিভারে চাপ দেওয়া এই  প্রতিক্রিয়া বারবার বৃদ্ধি করেছে, শক্তিশালী উদ্দীপক খাদ্যবস্তু। এইভাবে লিভারের চাপ দেওয়া এবং খাদ্যের মধ্যে অনুবর্তন ঘটে।  এই অনুবর্তনে প্রাণীর সক্রিয়তা একান্ত প্রয়োজন বলে এই কৌশলকে সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন বলে।

কাঠামো: 

এই অনুবর্তনের কাঠামোটি হল-

স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করো

সিদ্ধান্ত: 

এই  পরীক্ষা থেকে স্কিনার সিদ্ধান্ত নেন যে, আচরণ দুই ধরনের হয়-

১. রেসপনডেন্ট আচরণ: যে প্রতিক্রিয়ামূলক আচরণের  নির্দিষ্ট উদ্দীপক আছে ।

২. অপারেন্ট:  যে আচরণের নির্দিষ্ট কোনো উদ্দীপক নেই যেকোনো উদ্দীপকের  সঙ্গে যুক্ত করা যায়। এই উদ্দীপক গুলি হল- প্রাণী অভ্যন্তরীণ অবস্থা যেমন, আগ্রহ, বেদনা ও  অনুভূতি ইত্যাদি।

আরো পড়ুন – শিখনের প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান গুলি কি কি

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন – www.youtube.com/@DRMonojog

জিকে সংক্রান্ত ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন – www.youtube.com/@DRMonojogGK

পিডিএফ পেতে ভিজিট করুন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল – DR Monojog63

আরো পড়ুন –

মন্তব্য করুন