সোনালী চতুর্ভুজ কি

সোনালী চতুর্ভুজ কি – আজকের পর্বে আমরা তোমাদের সাথে আলোচনা করলাম সোনালী চতুর্ভুজ কাকে বলে এই টপিকটা নিয়ে ।

সোনালী চতুর্ভুজ কি :

সোনালী চতুর্ভুজ কি

আরো পড়ুন – বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সীমারেখা

সোনালী চতুর্ভুজ (Golden Quadrilateral) :

সংজ্ঞা :

ভারতের প্রধান চারটি মহানগর যথা – মুম্বাই, দিল্লি, কলকাতা ও চেন্নাই – কে ছয় লেনবিশিষ্ট (স্থানবিশেষে চার লেন) প্রায় ৫৮৪৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যসম্পন্ন সড়কপথ দ্বারা যুক্ত করা হয়েছে । এটিই সোনালি চতুর্ভুজ  নামে পরিচিত ।

প্রকল্প :

এই প্রকল্পটি ২০০১ সালে National Highway Authority of India (NHAI) -এর তত্ত্বাবধানে শুরু হয় এবং ২০১২ খ্রিস্টাব্দে শেষ হয়। এই পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়েছিল ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাননীয় অটলবিহারী বাজপেয়ীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে । এই প্রকল্পটি ভারতের মধ্যে বৃহত্তম এবং পৃথিবীর মধ্যে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। এর মোট দৈর্ঘ্য হল ৫৮৪৬ কিমি (৩৬৩৩ মাইল)।

সংযুক্তকারী শহর-নগর :

সোনালি চতুর্ভুজ – এর অন্তর্গত প্রধান চারটি মহানগরের সংযুক্তির বিবরণগুলি হল নিম্নরূপ –

  • দিল্লি – কলকাতা :  সড়কপথের নাম – NH19 ; দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪৫৩ কিমি ।
  • দিল্লি – মুম্বাই :  সড়কপথের নাম – NH48 ; দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪১৯ কিমি ।
  • মুম্বাই – চেন্নাই :  সড়কপথ – NH48 ; দৈর্ঘ্য প্রায় ১২৯০ কিমি ।
  • চেন্নাই – কলকাতা : সড়কপথ – NH16 ; দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬৮৪ কিমি ।

প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য শহর :

এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য শহরগুলি হলো – বেংগালুরু, আগ্রা, মথুরা, বারানসী, কটক, সুরাট, পুনে, কানপুর, জয়পুর, ভাদোদরা, আজমীর, ধানবাদ, ভাইজাগ, আহমেদাবাদ, দুর্গাপুর, বিজয়ওয়াড়া প্রভৃতি ।

গুরুত্ব :

সোনালি চতুর্ভুজ প্রকল্পের গুরুত্বগুলি হলো নিম্নরূপ –

  • (ক) সোনালী চতুর্ভুজ প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত পরিবহনের ফলে কৃষিজাত ফসল বাজারজাতকরণে সুবিধা হয়েছে এবং ফসলের পচন ও অপচয়রোধ অনেকাংশে কমানো সম্ভব হয়েছে ।
  • (খ) শিল্পের প্রসার ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে ।
  • (গ) এই প্রকল্প দেশের মুখ্য শহর ও বন্দরগুলির মধ্যে দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থার সহায়ক হয়েছে ।
  • (ঘ) ছোট শহরগুলি থেকে সহজে বাজার অঞ্চলে পৌছানোর ব্যবস্থা সহজ হয়েছে ।
  • (ঙ) শহর ও বন্দরের সরবরাহ অঞ্চলের আয়তন বৃদ্ধি পেয়েছে ।
  • (চ) দেশব্যাপী সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসার ঘটেছে ।
  • (ছ) রেলপথ, জলপথ ও আকাশপথ পরিবহনের উপর চাপ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হয়েছে ।
  • (জ) দেশজুড়ে ট্রাক পরিবহনের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে ।
  • (ঝ) শিল্পের কাঁচামাল সংগ্রহ, উৎপাদিত দ্রব্য বাজারজাতকরণ, শিকড়আলগা শিল্পের দেশব্যাপী বিকেন্দ্রীভবণের প্রসার ঘটেছে ।

আরো পড়ুন – উত্তর ভারতের নদনদী ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর

FAQs On – সোনালী চতুর্ভুজ (Golden Quadrilateral)

সোনালী চতুর্ভুজ কি ?

ভারতের প্রধান চারটি মহানগর যথা – মুম্বাই, দিল্লি, কলকাতা ও চেন্নাই – কে ছয় লেনবিশিষ্ট (স্থানবিশেষে চার লেন) প্রায় ৫৮৪৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যসম্পন্ন সড়কপথ দ্বারা যুক্ত করা হয়েছে । এটিই সোনালি চতুর্ভুজ  নামে পরিচিত ।

সোনালী চতুর্ভুজ এর দীর্ঘতম বাহু কোনটি ?

সোনালী চতুর্ভুজ এর দীর্ঘতম বাহু হল কলকাতা থেকে চেন্নাই। যার দৈর্ঘ্য ১৬৬৮ কিমি।

সোনালী চতুর্ভুজ এর ক্ষুদ্রতম বাহু কোনটি ?

সোনালী চতুর্ভুজ এর ক্ষুদ্রতম বাহু হল চেন্নাই থেকে মুম্বাই। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১২৯০ কিমি।

সোনালী চতুর্ভুজ এর দৈর্ঘ্য কত ?

সোনালী চতুর্ভুজ এর দৈর্ঘ্য ৫৮৪৬ কিমি (৩৬৩৩ মাইল)।

সোনালী চতুর্ভুজ কত সালে হয় ?

১৯৯৯ সালে প্রকল্পটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল, ২০০১ সালে এর কাজ শুরু হয়েছিল এবং এটি ২০১২ সালে শেষ হয়েছিল।

সোনালী চতুর্ভুজ এর গুরুত্ব আলোচনা করো ?

(ক) সোনালী চতুর্ভুজ প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত পরিবহনের ফলে কৃষিজাত ফসল বাজারজাতকরণে সুবিধা হয়েছে এবং ফসলের পচন ও অপচয়রোধ অনেকাংশে কমানো সম্ভব হয়েছে ।
(খ) শিল্পের প্রসার ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে ।
(গ) এই প্রকল্প দেশের মুখ্য শহর ও বন্দরগুলির মধ্যে দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থার সহায়ক হয়েছে ।
(ঘ) ছোট শহরগুলি থেকে সহজে বাজার অঞ্চলে পৌছানোর ব্যবস্থা সহজ হয়েছে ।
(ঙ) শহর ও বন্দরের সরবরাহ অঞ্চলের আয়তন বৃদ্ধি পেয়েছে ।
(চ) দেশব্যাপী সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসার ঘটেছে ।
(ছ) রেলপথ, জলপথ ও আকাশপথ পরিবহনের উপর চাপ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হয়েছে ।
(জ) দেশজুড়ে ট্রাক পরিবহনের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে ।
(ঝ) শিল্পের কাঁচামাল সংগ্রহ, উৎপাদিত দ্রব্য বাজারজাতকরণ, শিকড়আলগা শিল্পের দেশব্যাপী বিকেন্দ্রীভবণের প্রসার ঘটেছে ।

মন্তব্য করুন